• Breaking News

    ফরেন রিজার্ভ কিভাবে কাজ করে?

    foreign reserve

    এমনটা নয় যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের রিজার্ভ ই কমেছে।বড় থেকে ছোট সমস্ত অর্থনীতির দেশের রিজার্ভ কমেছে,যা বর্তমানে স্বাভাবিক বিষয়।

    বর্তমানে উপমহাদেশের কয়েকটি দেশের ফরেন রিজার্ভ --
    🇮🇳: $ ৬০০ বিলিয়ন
    🇧🇩: $. ২৭ বিলিয়ন
    🇦🇫 : $ ১০ বিলিয়ন
    🇳🇵: $ ১০ বিলিয়ন
    🇵🇰: $ ৬.৭ বিলিয়ন
    🇧🇹: $ ২.৫ বিলিয়ন
    🇱🇰: $ ২ বিলিয়ন
    ফরেন রিজার্ভ কিভাবে কাজ করে?এটা একটা অর্থনৈতিক প্রশ্ন,যেখানে অনেক বিষয় একসাথে চলে আসে।তবুও এই প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ এবং সরল তম উত্তর হচ্ছে -- আপনার বৈদেশিক আমদানি ক্ষমতা বা ক্রয় ক্ষমতা ততটাই বাড়বে যতটা আপনার ফরেন রিজার্ভ বাড়বে।
    এবার এখানে প্রশ্ন আসে যে কোন দেশ কতটা বৈদেশিক আমদানি করে ? উদাহরণ স্বরূপ, বর্তমানে একবছরে নিন্মোক্ত কয়েকটি দেশের বৈদেশিক আমদানি হল --
    🇮🇳: $ ৭২৫.৫৫ বিলিয়ন
    🇧🇩: $. ৭১.০২ বিলিয়ন
    🇵🇰: $ ৬৯.০৭ বিলিয়ন
    🇱🇰: $ ২১.৩৯ বিলিয়ন
    এবার বিষয় হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ে দেশের রিজার্ভে কেও হাত দেয় না, বৈদেশিক আমদানির জন্য। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু সরা বিশ্ব করোনা মহামারী পরবর্তী প্রকোপ, বৈশ্বিক যুদ্ধ সহ বিভিন্ন আর্থিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে,তাই তাদের দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য রিজার্ভে হাত দিতে হচ্ছে। রিজার্ভ ওর জন্যই রাখা হয়।
    আপনি কখনো দেখেছেন কি যে, সরকার রিজার্ভের টাকা খরচ করে দেশের কৃষি-শিল্প খাতে খরচ করছে?না দেখবেন না,মূলত তিনটি কাজে এই রিজার্ভ খরচ করা হয় --
    ১. খনিজ তেল কিনতে
    ২. সোনা কিনতে
    ৩. ডলারের বিপরীতে টাকার মান বজায় রাখতে
    এই কারণ তিনটি অবশ্যই উপমহাদেশের জন্য প্রজোয্য।
    ফরেন রিজার্ভ এর শক্তি মত্তা কখনো দেশের মানুষের জনসংখ্যার ওপর নির্ভর করে না,এটি নির্ভর করে বৈদেশিক আমদানির ওপর।ব্যাপারটা এমন,যদি আপনার দেশ সর্বক্ষেত্রে ১০০% স্বয়ংসম্পূর্ণ হত,তাহলে আপনার দেশের জনসংখ্যা যদি ৫০০ কোটি ও হত তবে আপনার ফরেন রিজার্ভ শূণ্য হলেও কোন সমস্যা ছিল না। কারণ আপনাকে তখন বৈদেশিক আমদানি করতে হতো না।আর তাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এর প্রয়োজনীয়তা হত না।
    অর্থাৎ ফরেন রিজার্ভ ততটাই শক্তিশালী,তে দেশ যতটা আত্মনির্ভরশীল।এখানে জনসংখ্যার প্রভাব পরোক্ষ,প্রত্যোক্ষ নয়।
    তাহলে উপমহাদেশের ফরেন রিজার্ভ সম্পর্কে কি বিষয় দেখা যাচ্ছে?সেটা হল --
    ⚫ শ্রীলঙ্কার বছরে গড় বৈদেশিক আমদানি প্রায় ২১ বিলিয়ন এবং তাদের ফরেন রিজার্ভ ২ বিলিয়ন, সেক্ষেত্রে তারা তাদের ফরেন রিজার্ভ দিয়ে গড়ে এক থেকে দেড় মাস বৈদেশিক আমদানি করতে পারবে।
    ⚫ পাকিস্তানের বছরে গড় বৈদেশিক আমদানি প্রায় ৭০ বিলিয়ন এবং তাদের ফরেন রিজার্ভ প্রায় ৭ বিলিয়ন, সেক্ষেত্রে তারা তাদের ফরেন রিজার্ভ দিয়ে গড়ে এক থেকে দেড় মাস সময় পর্যন্ত বৈদেশিক আমদানি করতে পারবে।
    ⚫ বাংলাদেশের বছরে গড় বৈদেশিক আমদানি প্রায় ৭১ বিলিয়ন এবং তাদের ফরেন রিজার্ভ প্রায় ২৭ বিলিয়ন, সেক্ষেত্রে তারা তাদের ফরেন রিজার্ভ দিয়ে গড়ে প্রায় সাড়ে চার মাস পর্যন্ত বৈদেশিক আমদানি করতে পারবে।
    ⚫ ভারতের বছরে গড় বৈদেশিক আমদানি প্রায় ৭২৫ বিলিয়ন এবং তাদের ফরেন রিজার্ভ প্রায় ৬০০ বিলিয়ন, সেক্ষেত্রে তারা তাদের ফরেন রিজার্ভ দিয়ে প্রায় দশ মাস বৈদেশিক আমদানি করতে পারবে।
    অর্থাৎ নিশ্চই বুঝতে পারছেন, উপমহাদেশের প্রতিটি রাষ্ট্র প্রধানের কিরকম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে হয়!
    বিঃ দ্রঃ -- এখানে আরো কয়েকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে,কয়েকটি দেশের তাদের ফরেন রিজার্ভ সম্পর্কে চিন্তা না করলেও হয়,যেমন --ইজরাইল ও ভুটান। ইজরাইলের সমস্ত অর্থনৈতিক চিন্তা আমেরিকা ও ইউরোপের।অপর দিকে ভুটানের অর্থনৈতিক চিন্তা ভারতের।