কুকুর সম্পর্কে কুরআন কি বলে?
শুধু ১-২ বার নয় পবিত্র কুরআনে ৫ বার কুকুরের কথা উল্লেখ আছে। এমনকি কোথাও মহান আল্লাহ তাদেরকে অপবিত্র প্রাণী কিংবা তাদের সাথে ভালো আচরণ করো না এমন কিছু বলেন নাই। কিন্তু তবুও উপমহাদেশের মুসলিম সমাজে কুকুরকে বাঁকা চোখে দেখা হয়।
কুকুর মানুষের বন্ধু:
কুরআনের ১৮তম সূরায়, একদল যুবকদের কথা বর্ণিত আছে যারা ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে শাস্তির ভয়ে গুহায় অবস্থান করেছিলো। আল্লাহ তাদের ৩০০ বছর ঘুমন্ত রেখেছিলেন এবং তারা যখন ঘুমিয়ে ছিলো একটি কুকুর তাদের সাথেও ঘুমন্ত ছিলো। সেই কুকুরটি তাদের উপর বর্ষিত আল্লাহর অনুগ্রহের ব্যাঘাত ঘটায় নাই, তাহলে আপনার আমার ইবাদতে কুকুর কীভাবে সমস্যা সৃষ্টি করবে আমার বোধগম্য হয় না!
মহান আল্লাহ তায়া’লা উদ্দেশ্য ব্যতিত কোন কিছুই উল্লেখ করেন না। এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের দেখাতে চেয়েছেন যে, কুকুর মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধু।
এমনকি আলোচ্য সূরাতেই রয়েছেঃ
• "নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষকে নানাভাবে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বুঝিয়েছি কিন্তু মানুষ সবার থেকে অধিক তর্কপ্রিয়"
(কুরআন-১৮ঃ৫৪)
আসলে সূরা কাহাফের গুহার মানুষদের ঘটনা দ্বারা আল্লাহ আমাদের এটা বুঝাতে চেয়েছেন যে, ধার্মিক লোকেরা কুকুর সাথে নিয়েও আল্লাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত এবং তাঁর সাহায্য পেতে পারে। আল্লাহ যদি কুকুর অপছন্দ করতেন তাহলে তিনি ধার্মিক লোকদের পাশে অবস্থানরত কুকুরের কথা কুরআনে বর্ণনা করতেন না।
আমরা যদি সত্যিকারার্থে আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশি হতে চাই তাহলে তাঁর গুণ সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে ওয়াকিবহাল হতে হবে। তিনি যদি কোন কথা বলেন থাকেন তাহলে তিনি সেটা বলার মতই বলেছেন কেননা কম গুরুত্বহীন কথা তিনি বলতে অপছন্দ করেন !
স্রষ্টা যদি কুকুরকে অভিশপ্ত না বলে থাকেন তাহলে এর মাধ্যমে তিনি আমাদের এটা বুঝাতে চান যে তিনিই এই সুন্দর প্রাণীটি সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি আমাদের থেকে আশা করেন যেন আমরা এই সুন্দর প্রাণীটির প্রতি যত্নবান হই যাতে আমরা গুহার সেইসব লোকদের মতো তাঁর অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পারি।
মুসলমানদের আশেপাশে কুকুর নিষিদ্ধ নয় এবং এটা পরিষ্কার যে, আল্লাহ কুকুরকে মানুষের জীবনের একান্ত অংশ হিসেবেই সৃষ্টি করেছেন।
কুকুরের উপস্থিতিতেই আল্লাহর অনুগ্রহ এবং ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়েছে।